জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছাকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেইজটি। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে। সর্বশেষে ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেজ এর পক্ষ হতে আপনাকে স্বাগতম জানাই।

বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০১৫

১০টি মিথ্যা আমাদের শিখানো হয় (শেষ পর্ব)

পূর্বের পর্বঃ ১০টি মিথ্যা আমাদের শিখানো হয় (১ম পর্ব)।

আমরা স্কুল জীবন থেকেই অনেক কিছু শিখি যে গুলিকে আমরা সারা জীবন সত্য বলে মেনে নিয়েই জীবন পার করে দেই। কিন্তু আমাদের যা শিখানো হয় তার সব কি সত্যি? অবশ্যই সত্যি তা না হলে তা আমাদের পাঠ্য পুস্তকে কি ভাবে ঠাই পেল? তাই না? কিন্তু এখন আপনাদের যা জানাবো তা জানলে হয়ত আপনার সব জানাই মনে হবে মিথ্যে হয়ে গেছে। আর এখন আমি যা বলব তা যদি আপনার বিশ্বাস না হয় তাহলে একটু কষ্টো করে খোঁজ করুন পেয়ে যাবেন আসল সত্য। যা হোক তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।


০৬) কলাম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেনঃ

আমরা সকলেই বই পুস্তক পড়ে জেনেছি যে আমেরিকার আবিস্কারক কলাম্বাস কিন্তু তা কিন্তু একদম ভূল। আমেরিকা কলাম্বাস কতৃক খুঁজে পাবার প্রায় ১,০০০ বছর আগেই ভাইকিং 'লেইফি এরিকসন' (Leif Ericson) প্রথম আবিস্কার করেন আমেরিকাকে।

ভাইকিং 'লেইফি এরিকসন'
এছাড়াও অনেক বইতে লেখা আছে কলাম্বাস প্রথম প্রমান করেন যে পৃথিবী গোল কিন্তু তার এই আমেরিকা আবিস্কারের অভিযানের পূর্বে প্রায় ২,০০০ বছর আগেই গ্রীক পরিসংখ্যানবিদেরা প্রমান করেছিলেন যে পৃথিবী গোল।


০৭) স্বাদ গ্রহনঃ
আমাদের শিখানো হয় যে আমাদের জিহ্বার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন স্বাদের জন্য দ্বায়ী। যেমনঃ মিষ্টি, টক, তেঁতো এবং নোনতা স্বাধ গ্রহনের জন্য আমাদের জিহ্বার ভিন্ন অংশ কাজ করে। এটা কিন্তু সম্পুর্ন ভূল। আমাদের সম্পূর্ন জিহ্বাই শুধু মাত্র স্বাদ গ্রহনের জন্য ব্যাবহৃত হয়। বিশ্বাস না হলে নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন। তবে 'টক' স্বাদ গ্রহনের জন্য এক ধরনের প্রোটিন দ্বায়ী যা আমাদের জিহ্বাতে থাকে এবং যখন কোন টক স্বাদের সংস্পর্শে আসে তখন এটি আমাদের ব্রেইনে সংকেত পাঠায় পচা খাবারের।


০৮) আব্রাহাম লিংকন দাস প্রথার বিলুপ্ত করেনঃ
আমেরিকার এই প্রেসিডেন্টকে কে না চিনেন, আর তাকে সকলেই মনে রাখেন মূলত তার একটি কাজের জন্য আর তা হল দাস প্রথার বিলুপ্তিকারক হিসেবে। এমনটিই তো শিখেছেন তাই না। কিন্তু এটাও সম্পূর্ন ভূল। ১৮৬৭ সালে তিনি বলেন, 'If I could save the union with out freeing any slave I would do it', তাহলেই বোঝেন শুধু মাত্র রাজনৈতিক কারনেই তিনি দাস প্রথার বিলুপ্ত ঘটাতে বাধ্য হন কিন্তু তার মনের ইচ্ছা মোটেও এটা ছিল না। ওহ আরেকটা কথা, তিনি দাস প্রথা বিলুপ্তির যে ঘোষনা দিয়েছেল যেখানে তিনি শুধু মাত্র সেই সকল অঞ্চলের দাস প্রথা বিলুপ্ত করেছিলেন যে অঞ্চল গুলি সে সময় মিত্র হিসেবে ঘোষনা দিয়ে ছিল। এই বিষয়ে একটু বিস্তারিত বুঝতে হলে অবশ্যই আপনাকে Civil War সম্পর্কে জানতে হবে।


০৯) নিউটনের অভিকর্ষন বল আবিস্কারঃ
আমরা সকলেই বিভিন্ন বইতে পরেছি যে অভিকর্ষন বলের আবিস্কারক আইজ্যাক নিউটন একদিন এক আপের গাছের নিচে বসে ছিলেন আর তখনই তার সামনে একটা আপেল গাছ থেকে পরে আর কেন গাছ থেকে এই আপেল পরে উপরে না যেয়ে নিচে পরল এই নিয়ে চিন্তা করতে যেয়েই তিনি আবিস্কার করে ফেলেন অবিকর্ষন বল। তাই না? এটাও কিন্তু সম্পূর্ন ভূল। নিউটন অনেক আগেই আবিস্কার করে ফেলেছিলেন যে কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করা না হলে তার অবস্থান কোন ভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।


১০) শিম্পাঞ্জি মানুষ একই পূর্ব পুরুষ থেকে আগতঃ
বিজ্ঞানের বই তে কেউ যে এই বিষয়টি নিয়ে পড়েন নাই এমন কেউ আছেন বলে মনে হয় না। যা হোক আমার পূর্ব পুরুষেরা বনের বান্দর ছিল কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আপনাদের জ্ঞানার্থে একটু বলে রাখি। বিবর্তন ধারায় আমরা যে উন্নত মস্তিস্ক পেয়েছি তার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন আমরা কিন্তু তার থেকে কয়েক শত বিলিয়ন বছর আগেই উন্নত মস্তিস্কের ধারক হয়েছি। তাই বর্তমানে বিজ্ঞানীদের ধারনা হয়ত কেউ আমাদের মস্তিস্কের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছে। তা না হলে এত তাড়াতাড়ি এত উন্নত মস্তিষ্ক কোন ভাবেই অর্জন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর যদি কেউ তা করে থাকে তাহলে বিবর্তন ধারায় কিছুটা ভূল আছে। এ নিয়ে অনেক কথা আছে তা নিয়ে পূর্বেও আলোচনা করেছি, কিন্তু এখানে যে কথা গুলি বললাম তা নিয়ে আলোচনা করি নাই, তবে ভবিষ্যতে বিস্তারিত বলব বলে এখানেই খ্যান্ত দিলাম। যা হোক এবার শিম্পাঞ্জিদের কাছে আবার ফেরা যাক। আসলে এই সিম্পাঞ্জি কোন ভাবেই আমাদের পূর্ব পূরুষ নয়। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ৬ মিলিয়ন বছর পূর্ব পর্যন্ত যে প্রমান পেয়েছে তাতে কোন ভাবেই প্রমান করা যায় না যে সিম্পাঞ্জি আমাদের ধারেকাছের কোন আত্মীয় ছিল।

লেখাকঃ জানা অজানার পথিক।
সম্পাদনায়ঃ দুরন্ত পথিক

কোন মন্তব্য নেই: