জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছাকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেইজটি। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে। সর্বশেষে ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেজ এর পক্ষ হতে আপনাকে স্বাগতম জানাই।

বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৪

‘‘দানিউবের সুন্দরী’’ ।। বুদাপেস্ট

বুদা আর পেস্ট, এই দুই শহর মিলিয়ে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট – ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলির মধ্যে একটি৷ মারিয়ানা বডজার সেই শহরে ট্যাক্সি চালাচ্ছেন গত ২৩ বছর ধরে৷


বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরির রাজধানী, যাকে ‘‘দানিউবের সুন্দরী'' বলে ডাকা হয়৷ ১৭ লাখের বেশি মানুষ বাস করেন এই মহানগরীতে৷ তাদের মধ্যে একজন হলেন মারিয়ানা বডজার, যিনি ২৩ বছর ধরে এই শহরে ট্যাক্সি চালাচ্ছেন৷ ন'বছর বয়সেই তিনি জানতেন, তিনি বড় হয়ে কী করতে চান: তাঁর জন্মের শহরে ট্যাক্সি চালাতে৷ অনেক অতিথি মারিয়ানা বডজার-কে গাইড হিসেবেও নেন৷ ৪২ বছর বয়সি মারিয়ানা তাদের দেখান বুদাপেস্টের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলো:

‘‘বাঁদিকে দেখুন৷ এটা হলো পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা: মাটিয়াস গির্জা আর জেলেদের দুর্গ৷ আর এখান থেকে বুদাপেস্টের ‘পেস্ট' দিকটা পুরোপুরি দেখা যায়৷ কাজেই আমি বিদেশি অতিথিদের প্রায়ই এখানে নিয়ে এসে পেস্ট-এর দৃশ্য দেখাই৷''

দানিউবের তিরে.....
দানিউব নদীর তীরের এই দৃশ্য ১৯৮৭ সাল যাবৎ ইউনেস্কো-র ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজ – যেমন ৮০০ বছরের পুরনো দুর্গ এলাকাটি৷ মাটিয়াস গির্জায় এককালে অস্ট্রিয়ার সম্রাটকে হাঙ্গেরির রাজমুকুট পরানো হতো৷ দুর্গের প্রাসাদটিকে বুদাপেস্টের ট্রেডমার্ক বলা চলতে পারে৷ হাঙ্গেরির জাতীয় সংগ্রহশালাও এই এলাকাতেই৷

ট্যাক্সি! ট্যাক্সি!
১৯১৩ সালে বুদাপেস্টে প্রথম ট্যাক্সি সার্ভিস চালু হয়৷ শুধু বুদাপেস্টেই নয়, গোটা হাঙ্গেরির সেই প্রথম ট্যাক্সি সার্ভিসে ২৫টি ট্যাক্সি ছিল৷ ত্রিশের দশকেই বুদাপেস্টে টেলিফোনে ট্যাক্সি ডাকা যেত – যা ছিল সারা বিশ্বে প্রথম৷ আজ বুদাপেস্টে ছ'হাজার ট্যাক্সি চলে৷ প্রতি মাসে দশ লাখের বেশি মানুষ ট্যাক্সি চড়েন৷ ইউরোপের অন্যান্য অনেক শহরের চেয়ে বুদাপেস্টে ট্যাক্সির ভাড়া আজও কম৷ মারিয়ানা জানালেন: ‘‘বুদাপেস্টে সব ট্যাক্সির চার্জ এক হতে হবে৷ কিলোমিটার বা সময়ের হিসেবে ভাড়া এক হওয়া চাই; বেসিক চার্জও এক হওয়া চাই: বর্তমানে কিলোমিটার প্রতি ৮৫ সেন্ট৷ '' সন্ধ্যে নামলে বুদাপেস্টের সাত নম্বর পল্লি হলো ঘুরতে যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গানের জায়গা৷ নব্বইয়ের দশকে এখানকার পোড়োবাড়িগুলোতেই শুরু হয়েছিল ‘‘ধ্বংসস্তূপের বার-রেস্তোরাঁ''৷ ইতিমধ্যে সেগুলোর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পঁচিশ অথবা ছাব্বিশে৷ এলাকার বৈশিষ্ট্যের কথা বললেন মারিয়ানা: ‘‘এটা একটা সুবিখ্যাত ‘পাব' এরিয়া, যাকে বলে কিনা ‘রোম পাব্স', অর্থাৎ ঘুরে ঘুরে একটা বার থেকে আরেকটা বার-এ যাওয়া যায়৷ বুদাপেস্টে সন্ধ্যায় বেরোতে হলে এটা দারুণ জায়গা, কেননা এখানকার পাব-গুলো সত্যিই দারুণ, আবার সস্তাও বটে৷ ''আগে মারিয়ানা বডজার প্রধানত রাতেই ট্যাক্সি চালাতেন৷ আজকাল আর তা করেন না৷ সারা দিন ট্যাক্সি চালানোর পর সন্ধ্যায় যখন বাড়িমুখো হন – তখন বুদাপেস্টে সন্ধ্যা নেমেছে৷

লেখকঃ স্টেফানি ড্রেশার/এসি
সম্পাদনায়ঃ দুরন্ত পথিক