জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছাকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেইজটি। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে। সর্বশেষে ।। জ্ঞানের সন্ধানে।। পেজ এর পক্ষ হতে আপনাকে স্বাগতম জানাই।

রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৪

কখনোই মিথ্যা বলে না "চোখের মণি"

মানুষের অনুভূতির প্রতিফলন ঘটে চোখের মণি বা তারাতে৷ ভয়, ঘৃণা ও আনন্দে প্রসারিত হয় চোখের তারা৷ অনেক সময় আমাদের ভবিষ্যৎ-সিদ্ধান্তকে আগেভাগে ফাঁসও করে দেয় এগুলো৷

আলোর গভীরতার ওপর নির্ভর করে চোখের মণির আকার পরিবর্তিত হয়
চোখের মণির আকার সমসময় পরিবর্তিত হয়৷ এটা নির্ভর করে আলোর গভীরতার ওপর৷ অন্ধকার পরিবেশে যতটা সম্ভব আলো প্রবেশ করানোর জন্য চোখের তারা বড় হয়ে যায়৷ আবার প্রখর সূর্যের আলোয় রেটিনাকে তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য ছোট হয়ে যায় মণি৷ চোখের তারার রঙিন অংশ বা কনীনিকা আলো আঁধারের এই নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী৷ তবে চোখের মণির আকারে প্রভাব পড়ার শুধু এটাই একমাত্র কারণ নয়৷
আনন্দ বা ভীতিতেও বড় হয়

আনন্দ বা ভীতিতে চোখের তারা বড় হয়ে ওঠে
আনন্দ বা ভীতিতেও চোখের তারা বড় হয়ে ওঠে৷ স্নায়ুতন্ত্রের এক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে৷ সেই প্রাচীন আমলেই যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বিপদে-আপদে বন্য জীবজন্তুর আক্রমণের সম্ভাবনা থাকলে মস্তিষ্ক কিছু বোঝার আগেই স্নায়ুতন্ত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া হয়৷ এখন অবশ্য বন্য জন্তুর হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য পালাতে হয় না আমাদের৷ কিন্তু সহজাত প্রতিক্রিয়া এখনও অত্যাবশ্যকীয়, যেমন রাস্তায় ট্রাফিক চলাচলের ক্ষেত্রে বা দুর্ঘটনা ঘটলে৷ চোখের মণি বিস্তৃত হয়ে ভেতরের অস্থিরতা প্রকাশ করে৷ আর এটা হয় আনন্দ বা আতঙ্কে কোনো শব্দ উচ্চারণ করার আগেই৷ তবে ঘৃণা, ভয় বা আনন্দ, ঠিক কোন অনুভূতিটা চোখের তারায় ফুটে তা বোঝা যায় না৷

গবেষণায় নতুন বিষয় জানা গিয়েছে

আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ভিলেম ডে জি ও টোবিয়াস ডোনার চোখের মণি নিয়ে গবেষণা করে নতুন একটি বিষয় উদঘাটন করেছেন৷ তাঁদের এই গবেষণা অনুযায়ী চোখের মণির আকার দেখে মানুষের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানা যায়৷ অর্থাৎ মানুষ কোনো সিদ্ধান্ত হ্যাঁ বা না সূচক নেবে কিনা, তা চোখের মণি বোঝা যায়৷ সিদ্ধান্ত হ্যাঁ হলে চোখের তারা প্রসারিত হয়৷

‘‘কোনো মানুষ যদি মিথ্যা বলে এবং এই মিথ্যা ধরা পড়তে পারে বলে ভীত হয়, তাহলে মণি প্রসারিত হতে পারে’’
এক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন মতও রয়েছে

চক্ষু চিকিত্সা বিজ্ঞান বা অপথ্যালমোলজি সোসাইটির হেলমুট ভিলহেল্ম অবশ্য এই তত্ত্ব মেনে নিতে নারাজ৷ তাঁর মতে, চোখের বিস্তৃত মণি শুধু এটাই প্রকাশ করে যে মানুষটি উত্তেজিত কিনা৷ কিন্তু কী ধরনের উত্তেজনা সেটা প্রকাশ করে না৷ ‘‘কোনো মানুষ যদি মিথ্যা বলে এবং এই মিথ্যা ধরা পড়তে পারে বলে ভীত হয়, তাহলে তার চোখের মণি প্রসারিত হতে পারে৷'' তবে বিস্তৃত চোখের মণি আনন্দ ও স্বস্তির প্রকাশও হতে পারে৷ চোখের মণি মিথ্যা বলে না৷ তারা সত্যি বলে৷ কিন্তু ঠিক কোন সত্যিটি, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷

লেখকঃ ইউলিয়া ভ্যার্গিন
সম্পাদনায়ঃ দুরন্ত পথিক